আজ প্রতিটি মানুষেরই বিভিন্ন কাজের (অনলাইন হোক বা অফলাইন) জন্য একটি নিজস্ব ই-মেইল এড্রেস প্রয়োজন।
অনলাইনে বিভিন্ন জায়গায় একাউন্ট খোলা, শপিং করা অথবা কোনরকম আবেদন জমা দেওয়া, যে কোন কাজের জন্য বর্তমানে ইমেইল এড্রেস এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
ইমেইল এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে, যোগাযোগের জন্য আমাদের প্রত্যেকের কাছেই একটি করে মোবাইল নাম্বার থাকা সত্ত্বেও ইমেইল এর প্রয়োজনীয়তা এত বেশি কেন।
এর উত্তরটা খুবই সাধারণ, ইমেইল এবং ফোন নাম্বার যোগাযোগের খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি মাধ্যম। কিন্তু ফোনের মাধ্যমে কোন ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা গেলেও তাকে যদি কোনরকম ডকুমেন্ট বা কোন লিংক পাঠাতে হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে ইমেইল এড্রেস প্রয়োজন ।
এছাড়াও অনলাইনে অনেক ক্ষেত্রে পরিচয় প্রমাণ এর জন্য ও অনেক সময় ইমেইল ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যদি আপনি অনলাইন কোন ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খোলেন তাহলে সেই ওয়েবসাইট এর তরফ থেকে আপনার ইমেইল এড্রেস ভেরিফাই করার জন্য একটি ইমেইল পাঠানো হয়।
এবং সেই ইমেইল এর মধ্যে থাকা লিংকে ক্লিক করলে তবেই আপনার অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই হয়। এক্ষেত্রে ইমেইল আপনার পরিচয় প্রমাণের জন্য ব্যবহার হল।
কিন্তু যদি এখনও পর্যন্ত যদি আপনার কোন ইমেইল আইডি না থেকে থাকে তবে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। কারণ আজ আমরা “জিমেইল আইডি খোলার নিয়ম” নিয়ে আলোচনা করব।
ইমেইল এড্রেস ইমেইল আইডি খোলার জন্য গুগোল ছাড়াও আরো অনেক সংস্থা রয়েছে যারা গুগলের মত ফ্রিতে ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইড করে। কিন্তু গুগোল এর ব্যাপ্তি অনেক বেশি হওয়ার কারণে জিমেইল এর মাধ্যমে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর যদি আপনি একজন এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারী হন তাহলে আপনাকে জিমেইল আইডি খুলতে হবে। কারণ অ্যান্ড্রয়েড ফোনের অ্যাপস্টোরে লগইন করার জন্য এবং কোন রকম অ্যাপ্লিকেশন লোড করার জন্য জিমেইল আইডি প্রয়োজন।
জিমেইল আইডি কিভাবে খুলবো ? একাউন্ট তৈরির নিয়ম
একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য মূলত আপনার যে সমস্ত জিনিস প্রয়োজন হতে পারে তা হল-
- কম্পিউটার বা ল্যাপটপ
- ইন্টারনেট কানেক্শনের
- মোবাইল নম্বর
- অন্য একটি ইমেইল এড্রেস
প্রথমদিকে জিমেইল একাউন্ট খোলার জন্য কোন রকম মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হতো না। কিন্তু বর্তমানে জিমেইল একাউন্টের সুরক্ষা অনেক বেশি উন্নত করা হয়েছে, এবং এই উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থার সুবিধা নেওয়ার জন্য জিমেইল একাউন্ট খোলার সময় নিজের মোবাইল নাম্বার দেওয়া অত্যন্ত জরুরী।
অনেক সময় আপনি নিজেদের ইমেইল এর পাসওয়ার্ড ভুলে যেতে পারেন। এই রকম পরিস্থিতিতে ইমেইলের পাসওয়ার্ড পুনরুদ্ধার করার জন্য আপনার নিজস্ব মোবাইল নাম্বার ছাড়াও অন্য একটি ইমেইল এড্রেসে প্রয়োজন হতে পারে।
এবং সেই দ্বিতীয় ইমেইল এড্রেসটি অ্যাকাউন্ট খোলার সময় নথিভূক্ত করতে হয়। আপনি যদি প্রথম বার ইমেইল এড্রেস খোলেন তাহলে এই দ্বিতীয় ইমেইল এড্রেসটি আপনার পরিচিত কারণ হলেও অসুবিধা নেই।
ইমেইল একাউন্ট তৈরী (create Gmail account step by step)
উপরে বলা তথ্য এবং প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি যদি আপনার হাতের কাছে থাকে তবে এবার আপনি জিমেইল এড্রেস খোলার জন্য প্রস্তুত। সুতরাং চলুন দেখা যাক কিভাবে জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হয়।
প্রথমে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে, গুগল ক্রোম বা অন্য যেকোন ওয়েব ব্রাউজার ওপেন করে জিমেইল ডট কম (gmail.com) ওয়েব সাইটটি ওপেন করুন ।

Step 1:-
গুগল জিমেইলের ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর আপনি একটি বাক্স দেখতে পাবেন, এটিকে sign in বক্স বলে। একবার জিমেইল আইডি তৈরি হয়ে যাওয়ার পর এই প্রশ্নটি মাধ্যমে আপনি তাতে লগইন করতে পারবেন।

কিন্তু যেহেতু আপনার কাছে এই মুহূর্তে কোন জিমেইল আইডি নেই তাই নতুন ইমেইল আইডি এবং পাসওয়ার্ড বানানোর জন্য এই বক্সের নিচে থাকা “Create account” লিংকে ক্লিক কোরতে হবে।
Step 2:-
Create account লিংকে ক্লিক করার পর একটি পেজ ওপেন হবে যেখানে একটি form রয়েছে। এই ফর্মে আপনার নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে ।

উপরের ছবিতে ফরমেট বিভিন্ন অংশকে নাম্বার দিয়ে চিহ্নিত করা হলো ।
- “First name” এবং “last name” এর জায়গায় আপনি নিজের প্রথম এবং শেষ নাম লিখুন।
- “Username” এর জায়গায়তে একটি unique username দিতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে এই জায়গাতে আপনি যে নামটা দেবেন সেটাই প্রতিশোধে আপনার গুগল বা জিমেইল আইডি হবে। যেমন “[email protected]”
- “password” এবং “confirm password” এর জায়গায় একটি strong password লিখুন। এই দুটো জায়গাতে আপনাকে সমান পাসওয়ার্ড টাইপ করতে হয়, খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনো রকম কোনো প্রার্থী না হয়।
- ওপরের ফর্ম এর তথ্য ঠিক আছে কিনা দেখে “next” এর লিংকে ক্লিক করুন।
Step 3:-
এর পর আপনার পেরসনাল ইনফর্মেশন নথিভুক্ত করার জন্য আরও একটি ফর্ম আসবে। এখানে আপনাকে নিজের personal information অর্থাৎ মোবাইল নম্বর, জন্মের তারিখ , দ্বিতীয় একটি ইমেইল এড্রেস ইত্যাদির মত কিছু গুরুত্ব পূর্ণ তথ্য দিতে হবে। এর সমস্ত তথ্য দেওয়ার ফলে আপনার অ্যাকাউন্ট অনেক বেশি সুরক্ষিত হয়ে যায়। কারন ভবিষ্যতে যদি আপনি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট এর পাসওয়ার্ড ভুলে যান তবে এর সনস্ত তত্থের সাহায্যে সেটি সহজেই পুনরুদ্ধার করতে পারবেন।

- “phone number” অপশনে আপ্নের নিজস্ব ফোন নাম্বার দিতে হবে। ভবিষ্যতে এই নাম্বার টি তেই জিমেইল আপনাকে OTP পাঠাবে।
- “recovery email address” option টিতে আপনার অন্য যেকোনো ইমেইল আইডি দিতে পারেন। যদি আপনার অন্য কোন ইমেইল এড্রেস না থাকে তবে , আপনার পরিচিত কোন বাক্তিরে ফোন নাম্বার দিতে পারেন। ভবিষ্যতে এই ইমেইল এড্রেস টি আপনি পরিবর্তন ও করতে পারবেন।
- “your birthday” এই অপশনে আপনি নিজের জন্মৰ দিন ও তারিখ দেবেন।
- “Gender” অপশনে গিয়ে নিজের লিংগ বাছুন। আপনি পুরুষ হলে “male” এবং মহিলা হলে “female” অপশনের বাছাই করবেন।
সবকাছু সঠিক ভাবে দেওয়ার পর নিচে “next” লিংকে ক্লিক করুন।
Step 4:-
Next এ ক্লিক করার পর আরও একটি নতুন ফর্মে আসবে “verify your phone number”। আপনি আগে যে ফোন নাম্বার টি দিয়েছেন এখানে সেটি verify কোরতে হবে। নম্বর verify করার জন্য জিমেইল আপনার মোবাইল নুম্বেরে একটি একটি কোড পাঠাবে ।
যদি নাম্বার টি আপ্নের কাছে থাকে তবে আপনি “send” অপশনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার কিছুক্ষণের মধ্যে “verification code” টি আপনার ফোন চলে যাবে।
যা আপনাকে পরের ফর্মে বসাতে হবে।

Step 5:-
এর পর “Get more from your number” বলে একটি পেজ আসবে। এখানে, গুগল অথবা জিমেইল আপনাকে গুগলের অন্য সব সেবা গুলির জন্য আপনার মোবাইল নম্বর ব্যবহার করার কথা জানাবে। যেমন, গুগলের ভিডিও কল সেবার মত সব সেবা রয়েছে। এগুলি আপনি পরেও যানতে বা আপনার অ্যাকাউন্ট এর সাথে সংযুক্ত করতে পারবেন তাই, নিচে “skip” লিংকে ক্লিক করুন।

Step 6:-
এর পর google terms & conditions পেজটি আসবে। Terms এবং conditions এ সম্মতি জানানর জন্য যেই privacy & terms পেজ আপনি দেখছেন তাতে নিচে “I agree” লিংকে ক্লিক করুন।

অভিনন্দন, আপনার নতুন জিমেইল একাউন্ট তৈরি হয়ে গেছে। এখন আপনি নিজের বানানো ইমেইল আইডি থেকে অন্য মেইল আইডিতে ইমেইল পাঠাতে পারবেন এবং অন্য কেউ আপনাকে এই জিমেইল আইডিতে মেইল পাঠাতে পারবে।
