Skip to content
Home » গুগল » গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি ?

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি ?

আজকের দিনে যদি বলা হয় যন্ত্র কথা শোনে তাহলে সেটা খুব একটা ভুল বলা হবে না। প্রথম প্রথম শুনলে একটু অবাক লাগতে পারে কিন্তু এটা সত্যি যে  বর্তমান যুগে যন্ত্র মানুষের কথা শুনে কাজ করতে পারে।  

অর্থাৎ আপনি কথার মাধ্যমে যন্ত্রকে কোন কিছু করার নির্দেশ দিতে পারেন। 

এটি সম্ভব হয়েছে “voice based artificial intelligence“  প্রযুক্তির জন্য।  গুগল তাদের গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট ( Google assistant) সার্ভিসটি এই প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে তৈরি করেছে যা আসলে একটি “Voice-Controlled Smart Assistant”।

শুধুমাত্র কথা বা শব্দের মাধ্যমে কোনো  electronic device কে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এটা কিছু বছর আগে পর্যন্ত ভাবাই যেত না ।

কেবল শব্দের মাধ্যমে (voice) একটি electronic device কে নিয়ন্ত্রণ করা বা কাজ করানোটা, বাস্তব জীবনে কখনো সত্যি হতে পারে বলে আমরা ভাবতেও পারিনাই।

কিন্তু আজ, প্রযুক্তির বিকাশ ও উন্নয়নের ফলে, এর ধরনের প্রযুক্তি আমাদের হাতের মুঠোয়। 

“Alexa“, “Siri”, “Google assistant“ ইত্যাদির মত বিভিন্ন জায়গায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) প্রধান প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

বর্তমানে আমাদের চারিদিকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার দিয়ে ধীরে ধীরে বাড়ছে।  এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যে শুধু  কোন যন্ত্রকে voice command দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় তা নয়।

 আমরা সারাদিনে যে সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করি তার অধিকাংশই কমবেশি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার রয়েছে।

সাধারণত প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার আমাদের চোখের আড়ালে থেকে যায়।  অর্থাৎ অনেক সময় আমরা বুঝতেও পারিনা যে আমরা কোন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করছি। 

 কিন্তু Google এর গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মাধ্যমে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারি। 

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি ? (What Is Google Assistant)

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট হলো গুগলের নিজের Smart Voice Controlled Assistant যেটা মূলত “voice based artificial intelligence“  প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে কাজ করে।

Google এর এই virtual assistant এর ব্যবহার মূলত mobile এবং smart home devices গুলতে দেখা যায়। 

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের সাহায্যে আপনি সহজেই অনেক কাজ করতে পারবেন। যেমন আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে, গুগলে কিছু সার্চ করা, খবর জানা, অ্যালার্ম সেট করা, রাশিফল ​​দেখা ইত্যাদি।

গুগলের আর একটি virtual assistant রয়েছে যা Google now নামে পরিচিত।

এবং, বলা হয়ে থাকে যে Google Assistant হলো Google Now  এরই একটি extension যেটাকে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

এটা, Google এর আগের থেকে অবস্থিত “ওকে গুগল ” নামে voice control এর একটি উন্নত প্রযুক্তি।

এটাকে তৈরি করা হয়েছে, mobile phone এবং smart home device  গুলোতে voice command এর সুবিধাজনক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে।

Voice command ব্যবহার করে গুগল এসিস্টেন্ট এর সাথে আপনারা যেকোনো ধরণের কথা বলতে পারবেন।

যেমন ধরুন,  আপনি যদি গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কে কোন রকম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন তাহলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিমেষের মধ্যে আপনাকে তার উত্তর বলে দেবে.

 শুধু তাই নয় Google assistant, “voice” এবং “text” দুধরণেরি command সাপোর্ট করে।

এখন আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন যে এটি একটি অ্যাপ । কিন্তু গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোন অ্যাপ নয় বরং গুগলের তৈরি একটি ফিচার যা প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনে পাওয়া যায়।

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর ইতিহাস

Google assistant এর ইতিহাস বলতে গেল প্রথমেই বলতে হয় “Google voice search“ এর কথা যা  সব থেকে প্রথমে Android smartphones এবং Desktop PC র Chrome browser এর জন্য 2011 সালে নিয়ে আসা হয়েছিল।

তবে, সেই সময় এটি খুব একটা advanced ছিলোনা ।

শুধু মাত্র, voice এর মাধ্যমে দেওয়া আদেশ কে google search করাটা ছিল voice search এর কাজ, যেটা সে ভালো করেই করতো।

Google voice search এর পতবরতি প্রজন্ম ছিল Google Now যা অনেক বেশি user friendly ছিল।

এটা, voice command এর মাধ্যমে Google search করা ছাড়াও আরো অনেক কাজ করতে পারতো।

Google now কে 2012 সালে release করা হয়েছিল।

এর পর, Google now কে আরও উন্নত ও আধুনিক করা হয় , যা 2016 সালে আমাদের কাছে  Google assistant হিসেবে আসে ।

গুগল নাও (Google now) কি ?

Google now হলো গুগলের ই তৈরি voice-activated personal assistant যেটাকে গুগল এসিস্ট্যান্ট এর আগে তৈরি করা হয়েছে।

বলতে গেলে Google now অনেকটা, Apple এর Siri এবং Microsoft এর Cortana’র মতোই।

এটা আসলে Android এবং iOS device গুলোতে থাকা Google search app এর একটি অংশ ছিল।

এর মাধ্যমে আমরা natural-sounding voice command ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করিয়ে নিতে পারতাম।

যেমন, ভয়েস কমান্ড এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সার্চ, alarms দেওয়া, volume adjust করা, social media posting ইত্যাদি কাজ করা সম্ভব।

যদি আপনি আপনার ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা মোবাইলে হাত না লাগিয়ে কোন কাজ করতে চান, এই পরিস্থিতিতে গুগল নাও এর ব্যবহার অত্যন্ত সুবিধাজনক।

সুধু “Ok Google” voice command ব্যবহার করে, screen lock থাকা অবস্থাতেও hands-free accessibility এর সাহায্যে বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব। 

তবে, বর্তমানে Google দ্বারা Google Now এর সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সেবা এখনো বন্ধ করা হয়নি তবে একে আরো উন্নত করা হয়েছে।

Google assistant কে আমরা Google Now এর আধুনিকইকরন ও বলতে পারি।

কারণ, Google assistant সেই সমস্ত কাজ করতে পারে যা, Google Now  পারো এবং তার সাথে সাথে আরো অনেক নতুন নতুন কাজও করতে পারে।

তাছাড়া, গুগল এসিস্ট্যান্ট এর interface খুবই user friendlier এবং conversational.

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কি ধরনের কাজ করতে পারে?

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট আপনার ভয়েস কমান্ড শোনে এবং আপনাকে বলা কাজটি করে। আপনি যদি “ওকে গুগল” বা “হেই গুগল” বলবেন, তাহলে এটি সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং আপনার দেওয়া নির্দিষ্ট অনুযায়ী কাজ করে।

এটি অনেক রকমের কাজ করতে পারে যেমন

  • আপনার কথা শুনে  ফোনে অবস্থিত বিভিন্ন অ্যাপ ওপেন করা। 
  •  বিশ্বের যে কোনো রকমের খবর অনুসন্ধান করা।
  • আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য  দেওয়া।
  • মিউজিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ  করা।
  • ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন রকমের আর্টিকেল পড়ে শোনানো।
  • আপনার কথাকে SMS রূপে পাঠানো।
  • আপনার নির্দেশ অনুযায়ী অনলাইনে বিভিন্ন রকমের ভিডিও এবং সেটিকে প্লে করা।
  • এর সাহায্যে আপনি অনলাইনে অনেক জিনিস সম্পর্কে তথ্য পেতে পারেন, যেমন আবহাওয়া , সংবাদ ইত্যাদি।
  • আপনার ডিভাইস এবং স্মার্ট হোম নিয়ন্ত্রণ করা।

গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট আপনার জন্য অন্য কিছু করতে পারে, সবই শুধু একটি “ভয়েস কমান্ড” এর মাধ্যমে।

আপনার ফোন গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সেটিং কিভাবে করবেন ?

আপনার নিজের মোবাইল ফোনে (smartphone) গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্যবহার করার জন্য, প্রথমে আপনাকে এই সুবিধাটি activate করতে হবে।

চিন্তার কোন কারণ নেই,  গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সেটিং করা একটি খুবই সহজ প্রক্রিয়া।

How to enable assistant in Android mobile – 

  • আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে Google app টি ওপেন করুন।
  • ডান হাতের নিচের দিকে থাকা “more” অপশনে ট্যাপ করুন।
  • এবার চলে আসুন settings >> Google assistant অপশন টিতে।
  • এবার assistant ট্যাব এর মধ্যে চলে আসুন।
  • এবার assistant devices এর নিচে থাকা phone অপশনে ট্যাপ করুন।
  • সব থেকে ওপরে আপনারা “Google assistant” এর option দেখতে পাবেন। এটিকে enable করে দিন।
  • শেষে, voice match এর নিচে থাকা “Hey Google” অপশনে ট্যাপ করে enable করুন।
  • {{congratulations}} আপনার মোবাইলে অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু হয়ে গেছে।

তবে সঠিক ভাবে আপনার মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট সেটিং হয়েছে কি না সেটা চেক দেখে নিন।

এর জন্য, আপনারা মোবিলের সামনে “Hey Google” বা “Ok Google” বলতে হবে, তার পর কিছু voice command দিতে হবে।

যেমন, “Hey Google, open funny videos on YouTube”.

মনে রাখবেন, কিছু কিছু মোবাইলে screen lock থাকা অবস্থায় assistant কাজ করবেনা।

এক্ষেত্রে, আপনাকে মোবাইল আনলক করে তার পর গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর ব্যবহার করতে হবে।

বর্তমানে কোন device গুলোতে Google assistant রয়েছে ?

আজকাল, এমন অনেক ডিভাইস রয়েছে যেখানে গুগল সহকারীর সুবিধা দেওয়া হয়েছে। Google pixel smartphone এ গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রথম চালু হয়েছিল। 

তার পর Google home এর জন্য এর ব্যবহার চালু করা হলো।

এর পরে ধীরে ধীরে প্রায় প্রত্যেক modern Android device গুলোতেও এর সুবিধা দিয়ে দেওয়া হয়।

বর্তমান সময়ে আধুনিক এন্ড্রয়েড টিভি (Android TV) গুলোতেও গুগল এসিস্ট্যান্ট এর সুবিধা আছে।

আপনার মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট আছে কিনা কি করে জানবেন ?

আপনার মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সুবিধা আছে কি নেই সেটা জানাটা খুব সহজ।

এর জন্য আপনি আপনার, মোবাইলের home button টিকে press করে রাখুন।

যদি আপনার মোবাইলে অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সুবিধা থাকে, তাহলে আপনারা “Select your assistant language” এর পেজ দেখতে পাবেন।

নিজের পছন্দের ভাষা select করার পর আপনারা Google assistant screen এবং অন্যান্য settings দেখতে পাবেন।

যদি আপনার mobile ফোনে home button press করার পর assistant screen না আসে, তাহলে ভাববেন আপনার মোবাইলে Google assistant এর সুবিধা নেই।

যদি আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে Mrshmallow v6.0.0 বা তার পরবর্তী অ্যান্ড্রয়েড  সংস্করণ থাকে তবে আপনার ফোন গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকার সম্ভাবনা বেশি। 

error: