আপনারা সবাই নিশ্চয়ই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন যেখানে অনেক ছাত্র একই ক্লাসে একসাথে বসে একজন শিক্ষকের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহন করে।
কিন্তু বর্তমানে করণা মহামারীর ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য সবাই ইচ্ছে না থাকলেও ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে। এই রকম পরিস্থিতিতে অফিস, আদালত এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবকিছুই সাধারণ জীবনযাত্রা থেকে অনেকটাই আলাদা রূপ নিয়েছে।
এই রকম পরিস্থিতিতে যেখানে মানুষ একে অপর সঙ্গে সামনাসামনি সামনা-সামনি দেখা অনেকটাই দ্বিধাবোধ করছে , তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলি এক অভিনব পদ্ধতিতে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে চলেছে।
একথা বলাই বাহুল্য যে বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার কার্যক্রম চালানোর জন্য অনলাইন ক্লাস এর গুরুত্ব তুলনাহীন।
তাহলে চলুন আমরা অনলাইন ক্লাস এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নেই যাতে প্রয়োজনে আমরা নিজেদের জীবনেও এই সুবিধা ব্যবহার পিছিয়ে না পড়ি।
অনলাইন ক্লাস কাকে বলে
অনলাইন ক্লাস এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা যেখানে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীকে একই জায়গায় উপস্থিত থাকতে হয় না।
অর্থাৎ অনলাইন ক্লাস এর ক্ষেত্রে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী দেশের বা বিশ্বের যে কোন স্থানে অবস্থান করতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার করে পড়াশোনা করা হয়।
সুতরাং অনলাইন ক্লাস কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং ইন্টারনেট ছাড়া সম্ভব নয়।
অনলাইন ক্লাস কিভাবে হয়
আপনারা হয়তো দেখে থাকবেন অনেক সময় অনেক ছাত্র তার শিক্ষকের ক্লাস করানোর মুহূর্তগুলিকে তাদের স্মার্ট ফোন এর ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ড করে রাখে।
এবং পরবর্তীতে বাড়িতে বসে যখন সে ক্লাসের পড়াশোনা মনে করার চেষ্টা করে তখন সেই ভিডিওটিকে চালিয়ে দেখে।
অনলাইন ক্লাস করার পদ্ধতি ও কিছুটা একইরকম, শুধু পার্থক্য হচ্ছে এখানে শিক্ষক এর ক্লাস রেকর্ড করা থাকে না। এখানে শিক্ষক লাইভ কনফারেন্সের মাধ্যমে ক্লাস নেন।
এবং একই রকম ভাবে শিক্ষার্থী ও লাইভ ক্যামেরার মাধ্যমে শিক্ষকের সামনে উপস্থিত থাকে।
যদি আপনি কখনও ফোনে কারোর সাথে লাইভ কনফারেন্স করে থাকেন তাহলে জিনিসটা আপনার জন্য বুঝতে অনেকটাই সহজ হবে।
অনলাইন ক্লাস ও এক ধরনের লাইভ কনফারেন্স যেখানে শুধুমাত্র পড়াশোনা নিয়ে আলোচনা হয়।
অবশ্যই পড়ুন
- গুগল কি ও Google সম্পর্কে অজানা তথ্য
- সার্চ ইঞ্জিন কি এবং কিভাবে কাজ করে তা জানেন?
- ভিপিএন (VPN) কি ? এটি ব্যবহার করে কিভাবে গোপনীয়তা রক্ষ্যা করা যায়
অনলাইন ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতি
আপনি যদি একজন শিক্ষক হন তাহলে অনলাইনে ক্লাস এর ব্যাপারে বিস্তারিত জ্ঞান থাকা টা আপনার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
এটি যে শুধু আপনার সুবিধার জন্য তা নয়, অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে শিক্ষার্থীদের এই অনলাইন ক্লাস এর বিভিন্ন খুঁটিনাটি এবং সমস্যা নিয়ে ও আলোচনা করতে হতে পারে।
তাহলে চলুন আমরা অনলাইন ক্লাস করার প্রক্রিয়া টিকে আরো ভালো বুঝে। একটি প্রকৃত অর্থে ভালো অনলাইন ক্লাসের জন্য দুই ধরনের জিনিস মাথায় রাখা প্রয়োজন।
তার মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে সঠিক উপকরণ এবং অপরটি হচ্ছে সঠিক প্রক্রিয়া।
যারা শিক্ষকতা করেন তারা অবশ্যই জানবেন যে একজন শিক্ষকের কাছে তার কলমের মূল্য কতটা। সুতরাং একজন শিক্ষক যখন কোন কলম বাছাই করেন তখন সে কলমের গুণমানের দিক থেকে কখনোই মধ্যস্থতা করেন না।
এখানে কলম এর উদাহরণ দিয়ে যা বোঝানোর চেষ্টা করছি তা হল অনলাইন ক্লাস এর ক্ষেত্রে উপকরণ এর গুরুত্ব অনেক বেশি।
তবে চলুন দেখে নেওয়া যাক online class এর জন্য কি ধরনের উপকরণ প্রয়োজন হতে পারে।
অনলাইন ক্লাস করার জন্য কি কি প্রয়োজন হতে পারে
1. Computer বা Laptop
যদিও স্মার্ট ফোনের সাহায্যে অনলাইন ক্লাস করানো সম্ভব কিন্তু computer বা laptop মাধ্যমে ক্লাস করানোর প্রক্রিয়াটি অনেকটাই সহজ হয়ে উঠতে পারে।
কম্পিউটার বা ল্যাপটপের স্ক্রিন স্মার্টফোনে তুলনায় অনেকটাই বড় হওয়ার এবং কম্পিউটারের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের input device যোগ করার সুবিধা থাকায় আপনি অনেক effectively অনলাইন ক্লাস করাতে পারবেন।
2. Internet connection
অনলাইন ক্লাস এর ক্ষেত্রে ইন্টারনেট কানেকশন হয়তো সব থেকে জরুরি একটি জিনিস যেটা ছাড়া অনলাইন ক্লাস করানো কার্যত অসম্ভব. এবং এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে আপনার ইন্টারনেট কানেকশন কি যেন ঠিকঠাক কাজ করে।
3. Webcam
কম্পিউটার বা স্মার্টফোন আপনি যে যন্ত্রটি ব্যবহার করুন না কেন তার সাথে ক্যামেরার সুবিধা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী।
ক্লাস করবার সময় শিক্ষার্থী যদি শিক্ষকে দেখতে পায় তাহলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অনেকটাই সুবিধে হয়।
অপরদিকে আপনি পড়ানোর সময় যদি শিক্ষার্থীর reaction দেখতে পান তাহলে আপনিও বুঝতে পারবেন যে সে বিষয়টিকে ঠিক করে বুঝতে পারছে কিনা।
এক্ষেত্রে webcam উভয়পক্ষের অনলাইন ক্লাসের experience কে অনেকটা improve করতে পারে।
4. Microphone
যখন আপনি live class করানোর সময় যে কথা গুলি আপনি বলবেন বলবেন, ঠিক কথাগুলি কেন স্পষ্টভাবে ছাত্রদের কাছে গিয়ে পৌঁছায় সেই ব্যাপারটা মাথায় রাখাটা অত্যন্ত জরুরী।
5. Online platform
সর্বোপরি অনলাইন টিউশন ক্লাস করানোর জন্য আপনার একটি ভালো online platform বাছাই করতে হবে।
Online platform মানে হলো এমন একটি প্লাটফর্ম যার মাধ্যমে আপনি এবং আপনার ছাত্ররা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি কথাবাত্রা এবং বিভিন্ন document আদান-প্রদান করতে পারবেন।
প্লাটফর্ম যেমন, zoom live meeting, YouTube live streaming, Google duo ইত্যাদি।
6. Place
যদিও online class করানোর জন্য কোনো বিশেষ জায়গার প্রয়োজন হয়না।
এখানে ছাত্র এবং শিক্ষক নিজের নিজের ঘর থেকেই online class করতে পারেন।
তবে, শিক্ষক হিসেবে আপনাকে শান্ত জায়গা বেছে নিতে হবে যাতে আপনার কথাবাত্রা শুনতে ছাত্রদের অসুবিধা না হয়।
অনলাইন ক্লাসের সুবিধা কি?
- প্রথম সুবিধা যা শিশুরা খুব পছন্দ করে তা হল তাদের কথাও যাওয়ার প্রয়োজন হয় না, ঘরে বসে যেকোনো সময় তাদের প্রিয় শিক্ষকের কাছ থেকে অনলাইন ক্লাস করতে পারে।
- Traditional ক্লাসরুমে, যদি আপনি কোন ক্লাস মিস করেন তাহলে আপনাকে নিজে থেকেই সেই টপিক টি বুঝতে হয়, কিন্তু অনলাইন ক্লাসে আপনি যখনই চান সীমাহীন সময়ের জন্য অনলাইন ক্লাসের বিষয়বস্তু অ্যাক্সেস করতে পারেন। যদিও এর জন্য ক্লাস টি রেকর্ড করে রাখতে হবে।
- এখন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে করা সমস্ত কাজ অনলাইনে পরিণত হয়েছে, যেহেতু শিক্ষার্থীরা এখন তাদের হোমওয়ার্ক এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলি অনলাইনে জমা দেয়, যা তাদের এবং শিক্ষক উভয়ের জন্যই সুবিধা জনক। এতে নোট বা অ্যাসাইনমেন্ট হারানোর ভয় নেই। এবং তারা ভবিষ্যতে যখনই চাইবে এই ফাইলগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে।
- এর পাশাপাশি, শিক্ষার্থীরা অনলাইনে তাদের পরীক্ষাও দিতে পারে ।
অনলাইন ক্লাসের অসুবিধাগুলি কী কী?
আমরা জেনেছি অনলাইন ক্লাসের সুবিধা কি, কিন্তু অনলাইন ক্লাসের অনেক অসুবিধা ও আছে, যা জানাও জরুরী। আসুন জেনে নিই:-
- যদি কোন শিশু সুস্রিঙ্খাল না হয় তবে সে অন্যদের থেকে অনেক পিছিয়ে পরতে পারে।
- অনলাইন ক্লাসে, practical class এর সুবিধা নাই। এর ফলে যে সমস্ত বিষয় practical class ছাড়া বোঝা যায় না সেগুলি ছাত্রদের বুঝতে বেশ সমস্যা হয়।
- একটি traditional ক্লাসরুমে, যখন সব শিশুরা একসাথে পড়াশোনা করে, তখন দুষ্টু শিশুরাও পড়াশোনা করাতে motivated হয়, কিন্তু অনলাইন ক্লাসে এটি সম্ভব নয়।